নকশিকাঁথা একটি সুকুমার শিল্পকলা। সাধারণ নান্দনিক নকশা সম্পন্ন কাঁথা কে নকশিকাঁথা বলে।সাধারণ কাঁথা সেলাই এর পর তার ওপর নানা সব নান্দনিক নকশা তোলার মাধ্যমে তৈরি হয় এক একটি নকশিকাঁথা। এই নকশিকাঁথা আমাদের বাঙালি ঐতিহ্যের এক অবিচ্ছেদ্য অংশ। প্রাচীন কাল থেকেই বাংলার প্রতিটি ঘরে ঘরে সেলাই হতো নানান নকশা সম্বলিত নান্দনিক সব নকশিকাঁথা। মজার ব্যাপার হলো এর প্রতিটি নকশিকাঁথার নকশা হতো আলাদা। একটির সাথে অন্যটির নকশায় মিল থাকতো খুবই কম বা থাকতোই না। কেননা প্রতিটি কাঁথা সেলাই হতো শিল্পীদের নিজস্ব শৈল্পিক ভাবনা ও কল্পনা দিয়ে আকাঁ নকশা থেকে।
লোক ও কারুশিল্প গবেষক দের গবেষণা থেকে আমরা জানতে পারি নকশিকাঁথার সাথে জড়িয়ে আছে আমাদের হাজার বছর এর ইতিহাস ও ঐতিহ্য।কোন একটা বিষয় কে শিল্পের দৃষ্টিতে বিচার করতে যে সব রীতিনীতি ও উপাদানের উপস্থিতি আবশ্যক নকশিকাঁথায় রহেছে সবইকটি রীতিনীতি ও উপাদান । রং, রেখা, আকার, জমিন, ছন্দ, মিল, ঐক্য, সমান্তরাল কি নেই নকশিকাঁথার। তাই নকশিকাঁথা কে বলা হয় একটি সুকুমার শিল্পকলা। বাংলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের গ্রামীণ নারীরাই এই শিল্পের মূল রুপকার। রুপান্তরের ধারাবাহিকতায় এই একবিংশ শতাব্দীতে এই শিল্পটি টিকে আছে স্বমহিমায় এবং দ্যুতি ছড়াচ্ছে। আমাদের সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও ব্যবহার এর মাধ্যমে টিকে থাকবে আরও শতাব্দী পর শতাব্দী ধরে এমনটাই প্রত্যাশা এই শিল্প সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের।